টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপের সমুদ্র উপকূল দিয়ে মিয়ানমারে অবাধে পাচার হচ্ছে জ্বালানি তেল ও খাদ্য সামগ্রী। তেমনি এক তথাকথিত পুলিশের সোর্স পরিচয়ে এসব পণ্য দেদারছে পাচার করছে গফুর সিন্ডিকেট। আবার মায়ানমার থেকে মাছের ট্রলার ও ফিশিং বোটে ইয়াবার বড় বড় চালান তার মাধ্যমে ঘাটে খালাস করার খবরও মিলেছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জ্বালানি তেল অকটেন, ডিজেল, সয়াবিন তেল পাচার বেড়েছে। এছাড়া বাদ যাচ্ছেনা পিয়াজ, রসুন, চাল, ডাল, ডিম, পান ও মরিচ সহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য। পাচারের মূল পয়েন্ট হচ্ছে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া ঘাট, দক্ষিণ পাড়া ঘাট ও মিস্ত্রি পাড়া ঘাট।
উল্লেখিত ঘাট গুলো থেকে দীর্ঘদিন ধরে চোরাইপথে অবৈধভাবে পণ্য পাচারের সহযোগিতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালাল গফুর সিন্ডিকেট। আবার মায়ানমার থেকে মাছের ট্রলার ও ফিশিং বোটে করে ইয়াবার বড় বড় তার মাধ্যমে ঘাটে খালাস করার খবরও মিলেছে।
শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমের ঘাট থেকে মিয়ানমারে খাদ্য ও জ্বালানি তেল পাচারে জড়িত বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাঝের পাড়ার মৃত উমর হামজার ছেলে আব্দুল গফুর প্রকাশ দালাল গফুর।
স্থানীয় শামসু (ছদ্মনাম) বলেন, সে দীর্ঘদিন ধরে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, এছাড়াও মাদক ও চোরাচালান ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। তার রয়েছে দশ সদস্যের একটি ঘাট কন্ট্রোল সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেট ম্যানেজ করে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম ঘাটে মাদকের বড় বড় চালান খালাস হয় এবং মায়ানমারে জ্বালানি তেল ও খাদ্য সামগ্রী পাচার হয়। শাহপরীরদ্বীপ মাঝের পাড়ার দালাল গফুরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এ দ্বীপে মাদক ও চোরাচালান কর্মকাণ্ড কমবে বলে ধারণা স্থানীয়দের। তিনি এসব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে। সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা হলেন, তার ছেলে ফারুক, মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে হামিদ, মগবুল মাঝির ছেলে হাফিজ উল্লাহ, নুরুল আমিন মেম্বারের ছেলে হেলাল, নুরুল আমিনের ছেলে এনায়েত, জয়নাল, হুন্ডি হেলাল, ডাংগর পাড়ার আবদুল আমিন, জহির আহমদ প্রকাশ ঝামেলা, ডাংগর পাড়ার মৃত সৈয়দ আহমদের ছেলে আবদুল করিম, মৃত কালা মিয়ার ছেলে শুক্কুর প্রকাশ সোর্স, মাঝের পাড়ার মতলবের দুই ছেলে নুরুল আলম, মোক্তার আহমেদ এর ছেলে নুর মোহাম্মদ প্রকাশ মধু,মীর কাশেম, ফয়েজ উল্লাহ ও আবদুল্লাহ।
চোরা কারবারিদের হাতে অবৈধ অস্ত্র ও দা কিরিচ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন মুদির দোকান ও পেট্রোল পাম্প থেকে জীপ গাড়ি,পিকআপ,ডাম্পার, নোহা মাইক্রো, সিএনজি, অটোরিকশা যোগে খাদ্য পণ্য ও মালামাল বহন করে অবৈধ অস্ত্রের পাহারায় তাদের গন্তব্য নিয়ে যায়, এবং সেখান থেকে তাদের নিজস্ব ট্রলার যোগে মিয়ানমারে পাচার করেন।
এদিকে সচেতন মহলের দাবী,লেখাপড়া না থাকলেও নিজেকে বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে অসহায় নিরীহ মানুষদের পুলিশি ভয় দেখিয়ে হয়রানি করছে দিনে রাতে।শুধু তাই নয় নিজেই স্বার্থ হাসিল করার জন্য একটি সিন্ডিকেট গঠন করে চলে এই পুলিশের সোর্স গফুর।
কথিত পুলিশের সোর্স বিভিন্ন বোট ঘাটে চাঁদাবাজি করে দাপিয়ে বেড়ায় শাহপরীরদ্বীপের বিভিন্ন গ্রামে। অসহায় নিরীহ মানুষদেরকে মামলার ভয় দেখিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে তাদেরকে নাজেহাল করা এই পুলিশের সোর্স গফুরের শাস্তি দাবী করছে সংশ্লিষ্ট ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসী।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত আব্দুল গফুর প্রকাশ দালাল গফুরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয়গুলো অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন, যে সমস্ত পাচারকারীরা আছে তাদেরকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যখনই সংবাদ পাচ্ছি তখনই তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।###
পাঠকের মতামত